সর্বশেষ লেখাসমূহ:

মেধা বা শ্রমের সৃষ্টি কপিরাইট

Print Friendly, PDF & Email

এডভোকেট মো: আকবর হোসেন

Property বা সম্পত্তি হচ্ছে দুই ধরনের movable and Immovable Property-স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি। কিন্তু এর বাইরে আর এক ধরনের সম্পত্তি রয়েছে যাকে বিশ্ব সম্প্রদায় Intellectual Property বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মানুষের মেধা ও মননের কর্মযোগ প্রয়োগের মাধ্যমে যে সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষের নিকট যার উপযোগিতা রয়েছে, তাই Intellectual Property বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি বলে পরিগণিত।
জনসাধারণ্যে প্রচলিত ধারণা কপিরাইট হলো শুধুমাত্র সাহিত্য সৃষ্টি। কিন্তু আইন তা বলে না। ২০০০ সালের কপিরাইট আইন বলে- চলচ্চিত্র, সাহিত্য, সঙ্গীত, স্থাপত্য, শিল্পকর্ম, আঁকা ছবি, ভিডিও, ভিসিডি, ফটোগ্রাফি, ক্যাসেট, খোদাই কর্ম, কম্পিউটার সফটওয়্যার ইত্যাদি কপিরাইটের অন্তর্ভুক্ত। মানুষের মেধা ও মননের সম্পর্কিত সৃষ্টি কপিরাইটের অধিকার প্রদান করেছে।
কপিরাইট অ্যাক্ট প্রথম এই ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবর্তন করা হয় ১৯১১ সালে। উক্ত আইনের আদলে ১৯১৪ সালে কপিরাইট আইন প্রণয়ন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কপিরাইট অধ্যাদেশ কার্যকরী করা হয়। তৎপরবর্তী ১৯৬৮ সালে পুনরায় কপিরাইট অধ্যাদেশ চালু করা হয়। অতঃপর ১৯৭৪ সালের কপিরাইট (Amendment) অ্যাক্ট দ্বারা উক্ত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে উক্ত আইনের প্রচলন করা হয়। বর্তমানে প্রচলিত কপিরাইট আইনটি ২০০০ সালের ১৮ জুলাই বাংলাদেশে বলবৎ করা হয়। সময়ের চাহিদার কারণেই নিত্য নতুন চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে নতুন নতুন বিষয়ের সৃষ্টি হচ্ছে- যা উক্ত আইনের অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। কোন মানুষের চিন্তা ও কর্মের সৃষ্টির স্বীকৃতি প্রদানের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি লাভবান হলেই মানুষের মধ্যে নতুন চিন্তা ও কর্মের প্রেরণা তৈরি হয়। যার ফলে সেই দেশ, জনপদ, এলাকা সর্বোপরি মানবজাতি তার দ্বারা উপকৃত হয়। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্যই মূলতঃ কপিরাইট আইনের সৃষ্টি। কারণ উক্ত আইন নকল প্রতিরোধ করে। আর এ কারণেই কপিরাইট আইন কর্মের সৃষ্টিকারীকে কপিরাইটের অধিকার প্রদান করেছে।
কপিরাইট অধিকার সংরক্ষণের পূর্ব শর্ত হলো কপিরাইট রেজিস্ট্রি করা। কপিরাইট অধিকারটি আইনে অস্থাবর বা ওসসড়াবধনষব হিসাবে গণ্য করা হয়। আর এ কারণেই কপিরাইটের অধিকারটি তিনি হস্তান্তর করতে পারেন অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে- যেমন আইনে অন্যান্য সম্পত্তির হস্তান্তর করা যায় এবং পাশাপাশি কপিরাইটের অধিকারী তার কর্মের অননুমোদিত ব্যবহার হতে পারেন অপরকে বিরত রাখতে। কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত অধিকার লঙ্ঘন হলে তিনি উহা আইনের মাধ্যমে প্রতিকার পেতে পারেন দেওয়ানী অথবা ফৌজদারী উভয়ই।
বাংলাদেশে একটি কপিরাইট বোর্ড রয়েছে কপিরাইট আইনকে প্রয়োগ করবার জন্যে। উক্ত বোর্ডের একজন রেজিস্ট্রার রয়েছেন। তিনি কপিরাইট রেজিস্ট্রি করেন। ২০০০ সালের কপিরাইট আইন নিয়ন্ত্রণ করছে কপিরাইট সংক্রান্ত সকল কর্মকে। বাংলাদেশ World Intellectual Property-এর পক্ষভুক্ত হওয়ায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে কপিরাইটের সুবিধা পাচ্ছে।

সর্বমোট পঠিত: 398

সর্বশেষ সম্পাদনা: নভেম্বর ৫, ২০১৮ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

প্রিজম আইটি: ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট-এর জন্য যোগাযোগ করুন- ০১৬৭৩৬৩৬৭৫৭